অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার আগে কি কি বিষয় আপনাকে জানতে হবে
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সিদ্ধান্ত একান্তই ব্যক্তিগত হতে পারে, কিন্তু এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে যেগুলি জানার মাধ্যমে আপনি আপনার পছন্দের টিভি নির্বাচন করতে পারবেন।
অনেকেই যখন নতুন টিভি কেনার সিদ্ধান্ত নেন, তখন তারা শুধু রঙ, মডেল, অথবা দাম দেখেন, কিন্তু আসলে এর পেছনে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত দিক রয়েছে। এই প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করবো অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার আগে যে বিষয়গুলি আপনাকে অবশ্যই জানার প্রয়োজন।
ভুমিকাঃ
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া আজকাল অনেকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে স্মার্ট টিভি একদিকে যেমন আমাদের বিনোদন ব্যবস্থাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে, তেমনি এর ব্যবহারিক সুবিধাগুলোও বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন টিভি শুধুমাত্র ধারাবাহিক অনুষ্ঠান বা সিনেমা দেখার জন্য নয়, বরং একে একটি কমপ্লিট হোম এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে, স্মার্ট টিভি কেনার সিদ্ধান্তটি কোনো সহজ কাজ নয়, কারণ এর পেছনে অনেকগুলি প্রযুক্তিগত এবং ব্যবহারিক দিক রয়েছে, যেগুলি বেশিরভাগ সময় অনুধাবন করা হয় না।
পোস্ট সুচিপত্রঃ অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার আগেযতটুকু মনে হয়, টিভি কেনার সময় মূলত দাম বা ডিজাইন দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি, কিন্তু এগুলির বাইরেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, যা আপনার স্মার্ট টিভি ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে প্রভাবিত করতে পারে। প্রথমত, আপনি কোন ধরনের টিভি চান – LED, OLED, QLED বা কোন টেকনোলজির সাথে টিভি মিলে, তা সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, রেজোলিউশন, সাউন্ড সিস্টেম, ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি, অ্যাপ সাপোর্ট, এবং অন্যান্য ফিচারগুলোও বিশেষভাবে লক্ষ্য করার বিষয়। আজকাল, বেশিরভাগ স্মার্ট টিভি গুলির মধ্যে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন, স্ট্রিমিং সার্ভিস এবং গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট বা অ্যামাজন অ্যালেক্সার মতো ভয়েস কন্ট্রোল ফিচার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা টিভির ব্যবহারকে আরও সহজ ও উন্নত করে তোলে।
এছাড়াও, আপনার টিভির জন্য প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট স্পিড এবং সেটআপের দিকটি অনেক সময় খেয়াল রাখা হয় না। টিভির ফিচারগুলির পূর্ণ সুবিধা নিতে হলে একটি ভাল ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন, বিশেষ করে যদি আপনি 4K ভিডিও স্ট্রিমিং, গেমিং, বা উচ্চমানের ভিডিও কন্টেন্ট দেখতে চান। তাই, আপনার বর্তমান নেটওয়ার্ক সংযোগ এবং ইন্টারনেট গতি অনুযায়ী একটি স্মার্ট টিভি বেছে নেয়া উচিত। এছাড়া, দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য টিভির ব্র্যান্ড এবং কাস্টমার সাপোর্ট সিস্টেমের বিষয়ে ভাবনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে যদি ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা ঘটে, আপনি দ্রুত সঠিক সেবা পেতে পারেন।
এই প্রবন্ধের মাধ্যমে, আমরা অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো আপনাকে অবশ্যই জানার প্রয়োজন, সেগুলির বিস্তারিত আলোচনা করবো। টিভি কেনার পূর্বে কীভাবে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক মডেলটি নির্বাচন করবেন, তার একটি সম্পূর্ণ গাইডলাইন প্রদান করা হবে। এছাড়া, স্মার্ট টিভির বিভিন্ন দিক যেমন ইন্টারফেস, ফিচার, ইকো সিস্টেম এবং গ্রাহক পর্যালোচনা সম্পর্কেও তথ্য দেওয়া হবে, যাতে আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
১. টিভির রেজোলিউশন বা স্ক্রীন রেজোলিউশন
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় প্রথমেই যে বিষয়টি আপনাকে চিন্তা করতে হবে তা হলো টিভির রেজোলিউশন। বর্তমান সময়ের টিভি বাজারে ৪কে (4K) এবং ৮কে (8K) রেজোলিউশনের টিভি খুবই জনপ্রিয়। ৪কে রেজোলিউশন অর্থাৎ ৩৮৪০x২১৬০ পিক্সেল এবং ৮কে রেজোলিউশন হল ৭৬৮০x৪৩২০ পিক্সেল। এই উচ্চ রেজোলিউশনের টিভি গুলি ছবির গুণগত মান অনেক ভালো এবং আপনার বিনোদন অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করে। তবে, আপনার কাছে কি ধরনের কন্টেন্ট রয়েছে তা আপনার টিভির রেজোলিউশন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি যদি 4K কন্টেন্ট দেখতে চান, তাহলে অবশ্যই একটি 4K স্মার্ট টিভি নির্বাচন করুন।
২. অপারেটিং সিস্টেম এবং ইউজার ইন্টারফেস
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার আগে অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন। সবচেয়ে সাধারণ এবং জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম হল অ্যান্ড্রয়েড, যেটি Google দ্বারা তৈরি। অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমটি আপনাকে সহজে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করতে সাহায্য করবে। এর মাধ্যমে আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে বিভিন্ন ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপ যেমন Netflix, YouTube, Disney+, Amazon Prime Video ইত্যাদি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়াও, অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট টিভি গুলি অত্যন্ত ব্যবহারকারী-বান্ধব এবং ইন্টারফেসের ডিজাইনও খুবই সহজ ও আকর্ষণীয়।
৩. স্মার্টফিচার এবং অ্যাপ্লিকেশন সাপোর্ট
স্মার্ট টিভি কেনার আগে টিভিতে যে সকল স্মার্টফিচার আছে তা নিশ্চিত করে দেখুন। অধিকাংশ স্মার্ট টিভি গুলি Wi-Fi কানেক্টিভিটি সাপোর্ট করে থাকে, যা আপনাকে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে সাহায্য করবে। যেমন, ভিডিও কলিং, অনলাইনে সিনেমা দেখা, এবং ওয়েব ব্রাউজিং। এমনকি আপনি নিজের প্রিয় স্ট্রিমিং সার্ভিস অ্যাপ যেমন YouTube, Netflix, অথবা Spotify ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া, বেশ কিছু স্মার্ট টিভি গুলি গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং অ্যালেক্সা সমর্থন করে থাকে, যার মাধ্যমে আপনি কণ্ঠ দিয়ে টিভি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
৪. সাউন্ড কোয়ালিটি
টিভি কেনার সময় সাউন্ড কোয়ালিটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। অনেক সময় টিভি কেনার পর দেখা যায় যে, টিভির অডিও কোয়ালিটি খুবই দুর্বল। এই কারণে, সাউন্ড বার অথবা এক্সটার্নাল স্পিকার ব্যবহার করার প্রয়োজন হতে পারে। অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় সাউন্ড কোয়ালিটি খেয়াল করা জরুরি, যাতে আপনি আপনার পছন্দের মুভি বা শো উপভোগ করতে পারেন। Dolby Atmos প্রযুক্তি বা DTS-HD সাপোর্ট করা টিভি গুলি অডিও কোয়ালিটিতে চমৎকার এবং আপনার দেখার অভিজ্ঞতা আরও ভালো করে।
৫. HDMI এবং USB পোর্টস
টিভি কেনার সময় পোর্টসংক্রান্ত বিষয়টি উপেক্ষা করা উচিত নয়। আপনার টিভিতে কতগুলি HDMI এবং USB পোর্ট রয়েছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। HDMI পোর্টের মাধ্যমে আপনি গেম কনসোল, ল্যাপটপ বা অন্যান্য ডিভাইস সংযুক্ত করতে পারবেন। USB পোর্টও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে আপনি পেনড্রাইভ বা হার্ড ড্রাইভের মাধ্যমে মিডিয়া ফাইল দেখতে পারবেন। এছাড়া, কিছু স্মার্ট টিভি গুলি মেমরি কার্ড স্লট এবং অতিরিক্ত পোর্টের সুবিধাও দিয়ে থাকে, যা আরো সুবিধাজনক হতে পারে।
৬. রিমোট কন্ট্রোল এবং ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট ফিচার
আজকাল স্মার্ট টিভি রিমোট কন্ট্রোলগুলিও খুবই উন্নত হয়ে গেছে। বেশ কিছু স্মার্ট টিভি রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ভয়েস কন্ট্রোল সিস্টেমও সাপোর্ট করে, যার মাধ্যমে আপনি শুধু কণ্ঠ দিয়ে টিভি চালাতে বা বন্ধ করতে পারবেন। এই ফিচারটি আপনার জীবনকে সহজ করবে, বিশেষ করে যদি আপনার হাতে কিছু না থাকে বা আপনি অগত্যা কিছু খুঁজে পাচ্ছেন না। গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং অ্যামাজন অ্যালেক্সা সাপোর্ট করা রিমোট কন্ট্রোল আপনাকে আরও সুবিধা দিতে পারে।
৭. টিভির ব্র্যান্ড এবং বিল্ড কোয়ালিটি
ব্র্যান্ড নির্বাচনও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিছু জনপ্রিয় ব্র্যান্ড যেমন Samsung, LG, Sony, এবং Xiaomi প্রখ্যাত স্মার্ট টিভি প্রস্তুতকারক। এই ব্র্যান্ডগুলো বেশ ভালো মানের পণ্য তৈরি করে এবং তাদের সেবাও চমৎকার। টিভির বিল্ড কোয়ালিটি এবং ডিজাইনও নজর দেওয়ার বিষয়। টিভির চেহারা এবং সাইজ আপনার ঘরের সাথে মানানসই হওয়া উচিত। মনে রাখবেন, যদি আপনি টিভির পোর্টেবলিটি এবং স্থায়ীত্ব নিশ্চিত করতে চান, তাহলে ভাল ব্র্যান্ডের পণ্য নির্বাচন করুন।
৮. ইনফরমেশন সিকিউরিটি এবং প্রাইভেসি
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হলো তথ্য সুরক্ষা। এই টিভিগুলি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন আপনার ব্যবহার করা অ্যাপ্লিকেশন বা আপনার প্রোফাইল তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। সুতরাং, আপনার গোপনীয়তা সুরক্ষিত রাখতে টিভির নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। বেশ কিছু স্মার্ট টিভি গুলি অটোমেটিক সিস্টেম আপডেট ফিচারও দিয়ে থাকে, যা নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৯. টিভির দাম এবং বাজেট
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার পূর্বে আপনার বাজেট নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাজারে বিভিন্ন দামের স্মার্ট টিভি পাওয়া যায়, তবে দাম নির্ধারণের আগে আপনাকে অবশ্যই টিভির প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য এবং আপনার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করতে হবে। আপনি যদি একটি সাধারণ টিভি চাচ্ছেন, তবে স্বল্প দামের টিভি বেছে নিন, কিন্তু যদি আপনি উন্নত প্রযুক্তি ও উচ্চ মানের ছবি এবং সাউন্ড চাচ্ছেন, তবে একটু বেশি দামে একটি প্রিমিয়াম টিভি কেনার পরামর্শ দেওয়া হয়।
১০. পর্যালোচনা এবং গ্রাহক রেটিং
টিভি কেনার আগে গ্রাহক রেটিং এবং পর্যালোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্য গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা এবং রিভিউ দেখে আপনি নির্ভরযোগ্যতা ও টিভির কার্যক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন। এটি আপনাকে একটি সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে। আপনি যদি অনলাইনে স্মার্ট টিভি কেনার পরিকল্পনা করেন, তবে সেই টিভির পর্যালোচনা এবং রেটিং দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
১১. টিভি মাউন্টিং এবং ইনস্টলেশন অপশন
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় টিভি মাউন্টিং এবং ইনস্টলেশন অপশনও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষত, যদি আপনার ঘরে সীমিত স্থান থাকে এবং আপনি টিভি দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখতে চান, তবে এমন একটি টিভি নির্বাচন করুন যা ওয়াল মাউন্ট সিস্টেম সাপোর্ট করে। বেশিরভাগ আধুনিক স্মার্ট টিভি গুলি VESA (Video Electronics Standards Association) স্ট্যান্ডার্ড মাউন্টিং সিস্টেম সমর্থন করে, যা সহজেই দেয়ালে স্থাপন করতে সক্ষম। আপনার যদি মেঝেতে টিভি রাখার পরিকল্পনা থাকে, তবে টিভির পা বা স্ট্যান্ডের ডিজাইন এবং স্থিতিশীলতা ভালোভাবে পরীক্ষা করুন। টিভির ইনস্টলেশন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রফেশনাল ইন্সটলার নিয়োগের কথা ভাবুন, যদি আপনার সেটআপের জন্য কোনো বিশেষ দিক প্রয়োজন হয়।
আরো পড়ুনঃ আইফোন (Apple) কেনার সময় যে সকল বিষয় জানা জরুরি
১২. টিভির শক্তি সঞ্চয় এবং ইকো-ফ্রেন্ডলি বৈশিষ্ট্য
আজকাল পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় শক্তি সঞ্চয়ের দিকে লক্ষ্য রাখুন। বেশ কিছু টিভি রয়েছে যা পাওয়ার সেভিং মোডে কাজ করে, যাতে কম বিদ্যুৎ খরচ হয় এবং পরিবেশের ওপর চাপ কমে। এমনকি বেশ কিছু মডেলে ইকো-ফ্রেন্ডলি প্রযুক্তি সমর্থন করে, যেমন LED ব্যাকলাইটিং প্রযুক্তি, যা কম বিদ্যুৎ খরচে কাজ করে। এ ছাড়া, টিভির স্ট্যান্ডবাই মোড বা অটো-শাটডাউন ফিচারও রয়েছে যা টিভি চালু না থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়, ফলে আরও বেশি শক্তি সঞ্চয় হয়।
১৩. টিভির গেমিং এক্সপিরিয়েন্স এবং গেমিং ফিচার
বর্তমান সময়ে গেমিং নিয়ে অনেক মানুষের আগ্রহ বাড়ছে, এবং স্মার্ট টিভি গুলি এখন গেমিং এক্সপিরিয়েন্সের জন্যও বেশ জনপ্রিয়। যদি আপনি গেম খেলতে চান, তবে এমন একটি টিভি নির্বাচন করুন যা গেমিং মোড সমর্থন করে। গেমিং মোডে টিভি কম পিক্সেল লেটেন্সি এবং দ্রুত রিফ্রেশ রেট প্রদান করে, যা গেমিং অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করে। যদি আপনি হাই-এন্ড গেম কনসোল যেমন PlayStation বা Xbox ব্যবহার করেন, তবে টিভির HDMI পোর্টের সাপোর্ট এবং গেমিং ফিচার যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক স্মার্ট টিভি 120Hz রিফ্রেশ রেট সমর্থন করে, যা গেমিংয়ে এক অত্যন্ত মসৃণ এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া প্রদান করে।
১৪. স্মার্ট টিভির আপডেট এবং সাপোর্ট
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার আগে আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, সফটওয়্যার আপডেট এবং টিভির মেইনটেনেন্স সাপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমটি সময়ের সাথে সাথে আপডেট হয়, যা নতুন ফিচার এবং নিরাপত্তা সমাধান প্রদান করে। টিভি কেনার পর একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর সফটওয়্যার আপডেট পাবেন। কিছু স্মার্ট টিভি ব্র্যান্ড, যেমন Samsung, LG, এবং Sony, তাদের টিভির জন্য নিয়মিত আপডেট প্রদান করে, যা ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে উন্নত করে। তাই টিভি কেনার আগে এর আপডেট সিস্টেম এবং দীর্ঘমেয়াদি সাপোর্টের কথা ভাবুন।
১৫. মেমরি এবং স্টোরেজ
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভির মেমরি এবং স্টোরেজও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ এটি আপনার টিভির পারফরম্যান্সের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক স্মার্ট টিভি ব্যবহারকারী অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করার সময় মেমরি ও স্টোরেজের অভাবের সম্মুখীন হন। যেহেতু আধুনিক অ্যান্ড্রয়েড টিভি গুলি বেশ কিছু অ্যাপ্লিকেশন এবং মিডিয়া ফাইল রাখতে পারে, তাই এতে পর্যাপ্ত স্টোরেজ থাকতে হবে। কয়েকটি স্মার্ট টিভিতে 8GB বা 16GB পর্যন্ত স্টোরেজ রয়েছে, যা বেশিরভাগ ব্যবহারকারীর জন্য যথেষ্ট। তাছাড়া, কিছু টিভিতে এক্সটার্নাল স্টোরেজের সুবিধাও থাকে, যাতে আপনি অতিরিক্ত মিডিয়া ফাইল সঞ্চয় করতে পারেন।
১৬. ডিভাইস ইন্টিগ্রেশন এবং কনটেন্ট শেয়ারিং
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় আপনার অন্যান্য ডিভাইসগুলির সাথে ইন্টিগ্রেশন ও কনটেন্ট শেয়ারিং সক্ষমতা যাচাই করতে হবে। বেশ কিছু টিভি গুলি স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, বা ল্যাপটপের সঙ্গে ইন্টারকানেকশন সক্ষম করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি আপনার ফোনের ছবিগুলি টিভিতে দেখতে চান, তাহলে আপনি স্মার্ট টিভির সাথে সহজে কনটেন্ট শেয়ার করতে পারবেন। Google Cast, AirPlay, এবং Miracast এর মত ফিচারগুলো স্মার্ট টিভিতে পাওয়া যায়, যা আপনাকে ওয়্যারলেস কনটেন্ট শেয়ারিং সুবিধা দেয়।
১৭. টিভির লাইফটাইম এবং রেপুটেশন
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় আপনার পছন্দের ব্র্যান্ডের টিভির লম্বা মেয়াদী ব্যবহার ও রেপুটেশন নিয়েও খোঁজ নিন। কিছু ব্র্যান্ড তাদের পণ্যের গুণগত মান এবং স্থায়ীত্বের জন্য খ্যাত, যা পরবর্তী কয়েক বছর আপনাকে সমস্যা থেকে মুক্ত রাখবে। স্মার্ট টিভির গুণগত মান এবং তার কার্যক্ষমতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে দীর্ঘ সময়ের ব্যবহারের জন্য। কিছু ব্র্যান্ডের স্মার্ট টিভি কয়েক বছর পর্যন্ত সেবা প্রদান করতে পারে, যার ফলে আপনাকে বারবার নতুন টিভি কিনতে হতে না পারে।
১৮. স্মার্ট টিভি এবং ইন্টারনেট স্পিডের সম্পর্ক
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় আপনার ইন্টারনেট স্পিডও একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। স্মার্ট টিভি ব্যবহারকারীরা প্রায়শই ইন্টারনেট স্ট্রিমিং, ভিডিও কলিং, বা অন্যান্য অনলাইন সার্ভিস ব্যবহার করেন। এসব কার্যক্রমের জন্য আপনার ইন্টারনেট সংযোগের গতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার ইন্টারনেট স্পিড কম থাকে, তবে আপনি ইউটিউব বা নেটফ্লিক্সে উচ্চ মানের ভিডিও দেখতে পারবেন না, কিংবা স্ট্রিমিং সেবা ল্যাগ বা ডিলেতে ভুগতে পারে। তাই স্মার্ট টিভি কেনার আগে আপনার বর্তমান ইন্টারনেট প্ল্যান এবং স্পিড যাচাই করে নিন। বিশেষত, 4K ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের জন্য ২৫ Mbps বা তার বেশি স্পিড প্রয়োজন হতে পারে। সুতরাং, উচ্চ গতি সম্পন্ন ইন্টারনেট প্ল্যান বেছে নেওয়া নিশ্চিত করে আপনার স্মার্ট টিভির পূর্ণ সম্ভাবনা ব্যবহার করা।
১৯. টিভির সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন আপডেট
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে টিভির সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন আপডেট। অনেক স্মার্ট টিভি এখনও অ্যাপ্লিকেশন বা ফিচারগুলোর আপডেট সরবরাহ করে না, যার ফলে অনেক সময় নতুন ফিচার বা সফটওয়্যার আপডেট পাওয়া যায় না। তবে, অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট টিভি গুলি গুগল প্লে স্টোর থেকে নিয়মিত অ্যাপ আপডেট পেতে সক্ষম। যেহেতু অ্যান্ড্রয়েড এক্সপেরিয়েন্স সরাসরি গুগলের সেবা এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলির ওপর নির্ভরশীল, তাই গুগলের নিয়মিত আপডেটের কারণে আপনি নতুন নতুন ফিচার এবং নিরাপত্তা প্যাচ পেতে থাকবেন। আপনার টিভির আপডেট ফিচার সম্পর্কে আগে থেকে খোঁজ নিন, যাতে পরে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন না হন।
২০. টিভির সেটআপ এবং কাস্টমাইজেশন অপশন
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার আগে অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় সেটআপ এবং কাস্টমাইজেশন অপশনও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। স্মার্ট টিভি গুলি বিভিন্ন সেটিংস এবং কাস্টমাইজেশন সুবিধা প্রদান করে, যা আপনার পছন্দ অনুযায়ী টিভির কার্যক্রম এবং দেখার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি আপনার টিভির স্ক্রীন ব্রাইটনেস, কনট্রাস্ট, এবং কালার টেম্পারেচার কাস্টমাইজ করতে পারেন। আবার, টিভির হোম স্ক্রীন বা মেনু পরিবর্তন করে আপনার পছন্দের অ্যাপ্লিকেশনগুলো সহজে অ্যাক্সেস করা সম্ভব। এমনকি, আপনি যদি বিভিন্ন ভাষায় কনটেন্ট দেখতে চান, তবে টিভির ভাষা সেটিংস পরিবর্তন করেও এটি ব্যবহার করা সম্ভব। সেই সঙ্গে, টিভির ইনপুট বা আউটপুট পোর্টের মাধ্যমে আপনি আপনার টিভির কার্যক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল কেনার সময় যে ৪০ বিষয় খেয়াল রাখতে হবে
২১. টিভির রিফ্রেশ রেট এবং মুভি/গেমিং এক্সপিরিয়েন্স
টিভি কেনার সময় রিফ্রেশ রেট এবং মুভি বা গেমিং এক্সপিরিয়েন্সও এক গুরুত্বপূর্ণ দিক। রিফ্রেশ রেট হলো প্রতি সেকেন্ডে কতটি ছবি টিভি স্ক্রীনে প্রদর্শিত হয়। বেশিরভাগ সাধারণ টিভির রিফ্রেশ রেট 60Hz, কিন্তু যদি আপনি গেমিং বা স্পোর্টস ইভেন্ট দেখতে চান, তবে একটি 120Hz বা তার বেশি রিফ্রেশ রেট সম্পন্ন টিভি বেছে নেওয়া উচিত। এর ফলে, টিভির স্ক্রীনে চলমান ছবি আরও মসৃণ এবং নিখুঁতভাবে প্রদর্শিত হবে। গেমারদের জন্য টিভির রিফ্রেশ রেট এবং লেটেন্সি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলি গেমিংয়ের সময় গ্রাফিক্সের প্রতিক্রিয়া ও গতিশীলতা নির্ধারণ করে।
২২. টিভির শক্তি খরচ এবং পরিবেশ বান্ধব বৈশিষ্ট্য
বেশ কিছু স্মার্ট টিভি এখন শক্তি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি হচ্ছে, যা কম শক্তি খরচ করে এবং পরিবেশবান্ধব হয়। টিভির শক্তি খরচও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ দীর্ঘ সময় ধরে টিভি চালানো খরচের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। যদি আপনি দীর্ঘ সময় টিভি দেখেন, তবে একটি শক্তি সাশ্রয়ী টিভি নির্বাচন করা সুবিধাজনক হবে। বর্তমানে বেশ কিছু টিভি, যেমন LED ও OLED মডেল, কম শক্তি ব্যবহার করে এবং দীর্ঘস্থায়ী সেবা প্রদান করে। এ ধরনের টিভি গুলি বিদ্যুৎ বিলও কমিয়ে দেয় এবং পরিবেশের ওপর কম চাপ সৃষ্টি করে।
২৩. টিভির ব্র্যান্ড এবং কাস্টমার সার্ভিস
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় ব্র্যান্ডের প্রতিশ্রুতি এবং কাস্টমার সার্ভিসও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্যের সাপোর্ট এবং কাস্টমার সার্ভিস ভিন্ন হতে পারে। আপনি যদি একটি বিশেষ ব্র্যান্ডের টিভি কিনেন, তবে তাদের কাস্টমার সার্ভিস এবং ওয়্যারেন্টি পরিষেবা সম্পর্কে জানুন। বেশ কিছু ব্র্যান্ড, যেমন Samsung, LG, Sony, এবং Xiaomi, তাদের গ্রাহকদের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী সাপোর্ট এবং মেরামত সেবা প্রদান করে থাকে। এছাড়াও, যদি টিভির কোনো সমস্যা হয়, তাদের কাস্টমার সাপোর্ট টিম দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে।
২৪. টিভি কেনার পর সঠিক ব্যবহারের পরামর্শ
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার পর, এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। টিভি দীর্ঘস্থায়ীভাবে ব্যবহার করতে চাইলে এটি সঠিকভাবে পরিচর্যা করা জরুরি। টিভির স্ক্রীন পরিষ্কার রাখা, অতিরিক্ত তাপ থেকে রক্ষা করা, এবং নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট করা গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, যদি টিভির কোন অ্যাপ্লিকেশন স্লো হয়ে যায়, বা সিস্টেম ল্যাগ শুরু হয়, তাহলে টিভির ক্যাশ মেমরি ক্লিয়ার করা যেতে পারে। স্মার্ট টিভির সঠিক ব্যবহার এবং যত্ন নিলে এটি অনেক বছর ধরে ভালোভাবে চলতে পারে।
২৫. টিভির রেটিং এবং রিভিউ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার আগে, বাজারে টিভির রেটিং এবং ব্যবহারকারীদের রিভিউ দেখে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টিভি কেনার পর আপনাকে যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে, তবে গ্রাহক রিভিউ আপনাকে সেই টিভি সম্পর্কিত সমস্যাগুলো বা সুবিধাগুলো সম্পর্কে এক ঝলক ধারণা দিতে পারে। বেশিরভাগ স্মার্ট টিভি রিভিউ ও রেটিং ওয়েবসাইটে সহজে পাওয়া যায়, যেমন Amazon, Flipkart, এবং অন্যান্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে। এই রেটিংগুলির মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন যে টিভিটি কতটুকু ভালো পারফর্ম করছে, বিশেষ করে দীর্ঘ সময় ব্যবহারের পর। সুতরাং, টিভি কেনার আগে সর্বোচ্চ রেটেড এবং জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের টিভি বেছে নেওয়া ভালো, যাতে আপনি সহজেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
২৬. স্মার্ট টিভির মাল্টিমিডিয়া ফিচার এবং কনটেন্ট কাস্টিং
এখনকার স্মার্ট টিভি গুলি শুধু টিভি শো ও সিনেমা দেখার জন্যই নয়, বরং বিভিন্ন মাল্টিমিডিয়া ফিচারও প্রদান করে। স্মার্ট টিভির সাহায্যে আপনি আপনার স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, বা পিসি থেকে কনটেন্ট কাস্ট করতে পারেন। Google Cast বা AirPlay প্রযুক্তি সাপোর্ট করার মাধ্যমে, আপনি সহজেই ফোনের স্ক্রীন টিভির বড় স্ক্রীনে দেখতে পারবেন। এই সুবিধাটি বিশেষত সিনেমা বা ফটো গ্যালারি শেয়ার করার জন্য খুবই কার্যকর। এর মাধ্যমে আপনি আপনার পরিবারের বা বন্ধুদের সঙ্গে একটি টিভি স্ক্রীনে ছবি বা ভিডিও শেয়ার করতে পারেন, যা সাধারণ টিভি থেকে অনেক বেশি ইন্টারেকটিভ এবং আনন্দদায়ক হয়ে ওঠে।
২৭. টিভির ভয়েস কন্ট্রোল এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভির অনেক নতুন মডেল এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং ভয়েস কন্ট্রোল সিস্টেম সমর্থন করে। এই ফিচারের মাধ্যমে, আপনি আপনার টিভিকে কণ্ঠ দিয়ে পরিচালনা করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি "Hey Google, turn on the TV" অথবা "Alexa, change the channel" বলতে পারেন এবং টিভিটি আপনার আদেশ অনুসারে কাজ করবে। এছাড়া, টিভির মধ্যে বিল্ট-ইন ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট যেমন Google Assistant বা Amazon Alexa থাকলে আপনি দ্রুত যেকোনো অনুসন্ধান করতে বা টিভির সেটিংস পরিবর্তন করতে পারবেন। এই সুবিধাটি বিশেষত তখন কার্যকর যখন আপনার হাতে কিছু না থাকে বা আপনি দূরবর্তী কন্ট্রোল ব্যবহার করতে চান না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে টিভি আরও স্মার্ট হয়ে ওঠে, এবং আপনার ব্যবহারের অভিজ্ঞতাও অনেক সহজ হয়ে যায়।
২৮. স্মার্ট টিভির পারফরম্যান্স এবং গতি
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার আগে স্মার্ট টিভির পারফরম্যান্স ও গতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। আধুনিক স্মার্ট টিভি গুলির মধ্যে অনেকগুলো উচ্চ পারফরম্যান্স এবং দ্রুত গতির পছন্দ দেওয়া হয়, যা বিভিন্ন অ্যাপ এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে দারুণ অভিজ্ঞতা প্রদান করে। বিশেষ করে, যদি আপনি স্ট্রিমিং সার্ভিস যেমন Netflix বা Disney+ দেখতে চান, তাহলে আপনার টিভির প্রসেসর, র্যাম এবং সিস্টেম স্পিড দ্রুত হওয়া উচিত। স্মার্ট টিভি যদি স্লো বা ল্যাগিং হয়ে যায়, তবে আপনার দেখার অভিজ্ঞতা ব্যাপকভাবে খারাপ হতে পারে। টিভির র্যাম এবং প্রসেসরের ক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখুন, যাতে আপনি যেকোনো ধরণের অ্যাপ্লিকেশন বা ফিচারের মধ্যে সুগম এবং দ্রুত পরিবর্তন করতে পারেন।
২৯. সফটওয়্যার ইন্টিগ্রেশন এবং এক্সটেনশন সাপোর্ট
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় সেগুলির সফটওয়্যার ইন্টিগ্রেশন এবং এক্সটেনশন সাপোর্ট সম্পর্কেও ভাবুন। আপনি যদি খুব বেশি অ্যাপ ব্যবহার করতে চান বা আপনার টিভি কাস্টমাইজেশন প্রয়োজন হয়, তবে এমন একটি টিভি বেছে নিন যা নতুন সফটওয়্যার এবং এক্সটেনশন সাপোর্ট করে। অ্যান্ড্রয়েড টিভি প্ল্যাটফর্মে Google Play Store এর মাধ্যমে আপনি নতুন অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করতে পারবেন, যা আপনাকে আরও বিভিন্ন কনটেন্ট অ্যাক্সেস করার সুযোগ দেবে। কিছু টিভি গুলি আরও কিছু এক্সটেনশন বা থার্ড-পার্টি অ্যাপ্লিকেশন সমর্থন করে, যা আপনার ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ করে তুলবে। এ ছাড়া, আপনি যদি চাইলে কোন বিশেষ ধরনের মিডিয়া সার্ভার ইনস্টল করতে পারেন যা আপনাকে ভিডিও বা অডিও ফাইল শেয়ার করতে সাহায্য করবে।
৩০. পণ্যের গ্যারান্টি এবং রিটার্ন পলিসি
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার সময় পণ্যের গ্যারান্টি এবং রিটার্ন পলিসি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যদি প্রথমবার টিভি কিনছেন, তবে এটি নিয়ে একটু সন্দিহান হতে পারেন। তাই, পণ্যের ওপর যদি কোনো গ্যারান্টি বা ওয়্যারেন্টি থাকে, তবে তা যাচাই করা জরুরি। অনেক ব্র্যান্ড ১ বছর থেকে ৩ বছর পর্যন্ত পণ্য গ্যারান্টি দিয়ে থাকে, যা আপনাকে কোনো সমস্যা হলে বিনামূল্যে মেরামত বা প্রতিস্থাপন করতে সাহায্য করবে। রিটার্ন পলিসি সম্পর্কেও খোঁজ নিন, যেন পণ্যটি আপনার প্রত্যাশা পূর্ণ না করলে সহজেই আপনি এটি ফেরত দিতে পারেন। বেশিরভাগ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেমন Amazon এবং Flipkart এ ১০ থেকে ১৫ দিনের রিটার্ন পলিসি থাকে, যা সুবিধাজনক হতে পারে।
৩১. টিভি সেলফ-ডায়াগনস্টিক এবং সমস্যা সমাধান
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভির মধ্যে সেলফ-ডায়াগনস্টিক ফিচার থাকলে তা ব্যবহার করা খুবই সুবিধাজনক। অনেক স্মার্ট টিভি এখন এমন একটি ফিচার সমর্থন করে যা টিভি নিজেই যে কোনো সমস্যার কথা জানিয়ে দেয়। আপনি যদি টিভির কোনো অংশে সমস্যা অনুভব করেন, যেমন ডিসপ্লে সমস্যা বা অডিও সমস্যার সম্মুখীন হন, তবে সেলফ-ডায়াগনস্টিক ফিচারটি দ্রুত সমস্যা সনাক্ত করতে সাহায্য করবে। এটি ব্যবহারকারীকে নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করতে বা টিভির মেরামত সম্পর্কে উপদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ড্রোন ক্যামেরা কেনার সময় যে ২৪ বিষয় আপনার জানতে হবে জেনে নিন বিস্তারিত
আমাদের শেষ কথা
অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট টিভি কেনার আগে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আপনি আপনার জন্য উপযুক্ত এবং সঠিক টিভি নির্বাচন করতে পারেন। আপনি যদি উপরে আলোচনা করা বিষয়গুলির প্রতি মনোযোগ দেন, তবে আপনার জন্য একটি সন্তুষ্টিদায়ক এবং দীর্ঘস্থায়ী টিভি কেনার অভিজ্ঞতা নিশ্চিত হবে। স্মার্ট টিভি কেবল বিনোদন নয়, বরং এটি আপনার ডিজিটাল লাইফস্টাইলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে। বাংলাআরটিকেল.কম এর সম্পূর্ণ পোস্টি পরার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আরো জানতে ক্লিক করুন
আমাদের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন
comment url