সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর সহজ ও সঠিক পদ্ধতি

সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদ্ধতি বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকলেও, প্রত্যেকটি পদ্ধতির নিজস্ব কিছু সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রবাসীরা সাধারণত মোবাইল ব্যাংকিং,

সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর সহজ ও সঠিক পদ্ধতি

পোস্ট সুচিপত্রঃব্যাংক ট্রান্সফার, মানি ট্রান্সফার কোম্পানি, এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর উপায়গুলি ব্যবহার করেন। মোবাইল ব্যাংকিং যেমন বিকাশ,

নগদ বা রকেট এখন বেশ জনপ্রিয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পৌঁছানোর জন্য বিশেষভাবে কার্যকর। এ পদ্ধতিতে ফি তুলনামূলকভাবে কম এবং টাকা প্রাপক খুব সহজে মোবাইলে গ্রহণ করতে পারেন।

অন্যদিকে, ব্যাংক ট্রান্সফার হলো আরেকটি নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি, যা সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে সহায়ক। যদিও এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কিছুটা সময় লাগে,

 তবে এটি বড় পরিমাণের টাকা পাঠানোর জন্য নিরাপদ ও কার্যকর। এ পদ্ধতিতে SWIFT কোড ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক লেনদেন সম্পন্ন করা হয় এবং এর মাধ্যমে টাকা সরাসরি প্রাপকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়।

মানি ট্রান্সফার কোম্পানির মধ্যে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম এবং রিয়া মানি ট্রান্সফারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো প্রবাসীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে খুব সহজে ও দ্রুত টাকা পাঠানো যায়, এবং প্রাপক নিকটবর্তী এজেন্ট পয়েন্ট থেকে তা সংগ্রহ করতে পারেন।

 এই সেবাগুলির একটি বড় সুবিধা হলো, প্রাপকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলেও তিনি এজেন্ট পয়েন্ট থেকে নগদ টাকা তুলতে পারেন।

অনলাইন মানি ট্রান্সফার প্ল্যাটফর্ম যেমন পেপাল বা ওয়াইজ (Wise) প্রবাসীদের মধ্যে আরও একটি জনপ্রিয় বিকল্প। এই প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে ক্রেডিট কার্ড বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা পাঠানো যায়, যা দ্রুত এবং সুবিধাজনক। 

তবে এসব প্ল্যাটফর্মের কিছু ফি থাকে এবং পাঠানো টাকার উপর নির্ভর করে বিনিময় হার পরিবর্তিত হতে পারে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, টাকা পাঠানোর সময় নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা বজায় রাখা। অনুমোদিত এবং বিশ্বস্ত মাধ্যম ব্যবহার করা উচিত, যাতে কোনো ধরনের প্রতারণা বা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে না হয়।

টাকা পাঠানোর পূর্বে বিভিন্ন মাধ্যমের ফি, লেনদেনের সময়, এবং বিনিময় হার যাচাই করে সবচেয়ে উপযুক্ত পদ্ধতি বেছে নেওয়া উচিত।

সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানো এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়ে গেছে, প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং বিভিন্ন লেনদেন পদ্ধতির উন্নতির কারণে।

 সঠিক পদ্ধতি বেছে নিয়ে নিরাপদে এবং দ্রুত টাকা পাঠানো গেলে প্রবাসীরা তাদের পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন, যা তাদের প্রিয়জনের জীবনে আর্থিক স্থিতিশীলতা আনতে সহায়ক হবে।মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠানো

মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম বর্তমানে অন্যতম জনপ্রিয় পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশে বিকাশ, নগদ, রকেটসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী সংস্থা রয়েছে। 

আরো পড়ুনঃ ঘরে বসে অনলাইনে ব্যবসা করে কোটিপতি হওয়ার কার্যকরী উপায়

আপনি সৌদি আরব থেকে যে কোনো মোবাইল ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্মে টাকা পাঠাতে পারেন। এই পদ্ধতি দ্রুত ও নিরাপদ এবং রিসিভার সহজেই তাদের মোবাইলে টাকা গ্রহণ করতে পারে।

মানি ট্রান্সফার কোম্পানির মাধ্যমে টাকা পাঠানো

ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম, রিয়া মানি ট্রান্সফার, ইত্যাদি জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার কোম্পানির মাধ্যমে আপনি সরাসরি বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে পারেন। এই কোম্পানিগুলির সেবা দ্রুত ও নিরাপদ, যা ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধাজনক।

 প্রাপকের কাছাকাছি এজেন্ট পয়েন্টে টাকা সংগ্রহ করার সুবিধা রয়েছে, এবং অনেক ক্ষেত্রেই কিছু নির্দিষ্ট এজেন্ট পয়েন্টে পৌঁছে তাৎক্ষণিকভাবে অর্থ তুলতে পারেন।

ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা পাঠানো

সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমেও টাকা পাঠানো একটি প্রচলিত পদ্ধতি। এই প্রক্রিয়ায় প্রাপক ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি টাকা জমা হয়। 

এর জন্য, প্রাপককে একটি বৈধ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং ব্যাংকের SWIFT কোড প্রদান করতে হয়। তবে ব্যাংক ট্রান্সফার পদ্ধতিতে টাকা প্রেরণ করার সময় কিছু ফি এবং লেনদেনের সময় বিবেচনা করতে হবে। সাধারণত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।

অনলাইন মানি ট্রান্সফার প্ল্যাটফর্ম

পেপাল, পেওনিয়ার, ট্রান্সফারওয়াইজ (Wise) এর মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোও প্রবাসীদের জন্য অর্থ পাঠানোর সহজ মাধ্যম। 

এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে আপনি আপনার সৌদি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ক্রেডিট কার্ড লিঙ্ক করে সহজেই টাকা পাঠাতে পারেন। প্ল্যাটফর্মের ফি নির্ভর করে ট্রান্সফারের পরিমাণ এবং গন্তব্যের ওপর।

ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে টাকা পাঠানো

যদিও এটি একটি তুলনামূলকভাবে নতুন পদ্ধতি, ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে টাকা পাঠানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিটকয়েন বা অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে আপনি কম ফি দিয়ে বাংলাদেশে টাকা পাঠাতে পারেন। 

তবে এই পদ্ধতিতে পাঠানোর জন্য প্রাপকেরও ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেট থাকতে হবে এবং তারা এ সম্পর্কে অবগত হতে হবে।

টাকা পাঠানোর সময় মাথায় রাখার বিষয়সমূহ

১. ফি এবং চার্জ: যে পদ্ধতিতেই টাকা পাঠান না কেন, প্রতিটি লেনদেনের সাথে কিছু ফি সংযুক্ত থাকে। তাই লেনদেনের ফি বিবেচনা করে সেরা বিকল্প বেছে নেওয়া উচিত।

২. ট্রান্সফারের সময়: বিভিন্ন পদ্ধতিতে লেনদেনের সময় বিভিন্ন রকম হতে পারে। মোবাইল ব্যাংকিং বা মানি ট্রান্সফার কোম্পানির মাধ্যমে লেনদেন তাৎক্ষণিক হতে পারে, কিন্তু ব্যাংক ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।

৩. নিরাপত্তা: টাকা পাঠানোর নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে বিশ্বস্ত এবং অনুমোদিত মাধ্যম ব্যবহার করা উচিত।

৪. কারেন্সি রেট: সৌদি রিয়াল এবং বাংলাদেশি টাকার বিনিময় হারের উপরও ট্রান্সফারের সময় প্রভাব পড়ে।

টাকা পাঠানোর সেরা পদ্ধতি বেছে নেওয়ার টিপস

সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি থাকলেও সঠিক পদ্ধতি বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু টিপস দেওয়া হলো, যা আপনাকে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সেরা পদ্ধতি বেছে নিতে সাহায্য করবে:

  1. গতি ও সময়ের প্রয়োজনীয়তা বুঝুন: আপনি যদি তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পাঠাতে চান, তবে মোবাইল ব্যাংকিং বা মানি ট্রান্সফার কোম্পানি ব্যবহার করা শ্রেয়। তবে যদি আপনার টাকা পাঠানোর জন্য সময় হাতে থাকে, ব্যাংক ট্রান্সফার বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন, যেখানে কিছুটা সময় লাগতে পারে কিন্তু ফি তুলনামূলক কম।

  2. ট্রান্সফার খরচ ও ফি: প্রতিটি পদ্ধতির সাথে কিছু ফি যুক্ত থাকে, যা লেনদেনের পরিমাণ ও প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে। তাই আপনি যেভাবে টাকা পাঠাবেন, তার আগে ফি সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। আপনি চাইলে কম ফি সহ পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন, যাতে আপনার পাঠানো টাকার বড় অংশ গ্রহণকারী পেতে পারে।

  3. নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: যে পদ্ধতিতেই টাকা পাঠান না কেন, তার নিরাপত্তা আগে নিশ্চিত করুন। অনুমোদিত মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক বা প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন। কখনোই অবৈধ বা সন্দেহজনক উৎস ব্যবহার করবেন না, যা আপনার টাকা হারানোর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

  4. কারেন্সি রেটের উপর নজর দিন: যেকোনো ধরনের আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে কারেন্সি রেট একটি বড় বিষয়। আপনি যখন সৌদি রিয়াল থেকে বাংলাদেশি টাকা পাঠাচ্ছেন, তখন বর্তমান বিনিময় হার পরীক্ষা করুন। কিছু মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠান বেশি ফি ছাড়িয়ে কম রেট অফার করে থাকে, যা আপনার প্রেরিত টাকার মূল্য কমিয়ে দেয়।

আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার সহজ নিয়ম

  1. গ্রাহক সেবা: মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের গ্রাহক সেবা কতটা সহজলভ্য এবং তারা কিভাবে সমস্যার সমাধান করে, তাও বিবেচনা করা জরুরি। প্রয়োজনের সময় তারা সহায়তা দিতে পারবে কিনা, সে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।

সৌদি আরব থেকে টাকা পাঠানোর সময় সাধারণ জিজ্ঞাসা (FAQ)

প্রশ্ন ১: মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে কত সময় লাগে?
উত্তর: মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে সাধারণত কয়েক মিনিট সময় লাগে। এটি খুবই দ্রুত এবং প্রাপক তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পেয়ে যায়।

প্রশ্ন ২: ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা পাঠানো নিরাপদ কি?
উত্তর: হ্যাঁ, ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা পাঠানো খুবই নিরাপদ। তবে এর জন্য প্রাপকের সঠিক ব্যাংক তথ্য এবং SWIFT কোড প্রয়োজন হয়। প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে ২-৩ দিন সময় লাগতে পারে।

প্রশ্ন ৩: কোন মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে ভালো?
উত্তর: মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানিগ্রাম এবং রিয়া মানি ট্রান্সফার জনপ্রিয়। এগুলোর মধ্যে আপনার সুবিধামত প্রতিষ্ঠান বেছে নিতে পারেন, কারণ সবগুলোই নির্ভরযোগ্য এবং দ্রুত সেবা প্রদান করে।

প্রশ্ন ৪: ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে কী ঝুঁকি আছে?
উত্তর: ক্রিপ্টোকারেন্সির মান খুবই অস্থির হতে পারে, তাই এই পদ্ধতিতে ঝুঁকি থাকতে পারে। এছাড়া প্রাপক এবং প্রেরকের ক্রিপ্টো সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা জরুরি।

অতিরিক্ত পরামর্শ: আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্কতা

আন্তর্জাতিক লেনদেনের সময় কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন আপনি সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠাচ্ছেন। এখানে কিছু অতিরিক্ত পরামর্শ দেওয়া হলো যা আপনাকে সুরক্ষিত রাখবে এবং আপনার লেনদেন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করবে:

  1. অনলাইন প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকুন: অনেক সময় অনলাইনে বা মোবাইলের মাধ্যমে প্রতারণার চেষ্টা করা হয়। আপনি যেখান থেকে টাকা পাঠাবেন, সেই প্ল্যাটফর্মটি যেন বিশ্বস্ত ও সুনির্দিষ্ট হয় তা নিশ্চিত করুন। আপনার ব্যক্তিগত ব্যাংক তথ্য বা পাসওয়ার্ড কারো সাথে শেয়ার করবেন না।

  2. লেনদেনের রসিদ রাখুন: টাকা পাঠানোর পর প্রতিটি লেনদেনের রসিদ বা রেফারেন্স নম্বর সংরক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে এই রসিদ বা রেফারেন্স নম্বরটি আপনার প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে এবং দ্রুত সমাধান পেতে সহায়ক হবে।

  3. বারবার একই পদ্ধতি ব্যবহার করুন: আপনি যদি একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তবে সেই পদ্ধতিটি বারবার ব্যবহার করুন। পরিচিত প্ল্যাটফর্মে বারবার লেনদেন করলে আপনার সময় ও ঝুঁকি কমে যাবে।

  4. নিয়মিত রেট চেক করুন: যেহেতু কারেন্সির রেট নিয়মিত পরিবর্তিত হয়, তাই টাকা পাঠানোর সময় সর্বোত্তম বিনিময় হার পেতে বিভিন্ন রেট চেক করুন। অনেক সময় মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ ছাড় বা অফার দিয়ে থাকে, যা আপনার পাঠানোর সময় খরচ কমাতে পারে।

  5. লেনদেনের সীমা সম্পর্কে জানুন: অনেক প্ল্যাটফর্ম বা ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে সীমা আরোপ করে। আপনি যদি বড় পরিমাণে টাকা পাঠাতে চান, তাহলে আগে থেকে সেই সীমা এবং শর্তগুলো জেনে নিন।

  6.  প্রয়োজন হলে আপনার ব্যাংক বা মানি ট্রান্সফার প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে লেনদেনের সীমা বাড়ানোর ব্যাপারে আলোচনা করতে পারেন।

  7. এমার্জেন্সি ফান্ড পাঠানোর পদ্ধতি জানুন: যদি কোনো জরুরি পরিস্থিতি ঘটে, যেখানে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পাঠানোর প্রয়োজন হয়, তবে কীভাবে দ্রুত টাকা পাঠানো যায় তা জেনে রাখা উচিত। যেমন, অনেক সময় ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মতো প্রতিষ্ঠানগুলি তাৎক্ষণিক সেবা প্রদান করে থাকে, যা আপনি বিশেষ পরিস্থিতিতে কাজে লাগাতে পারেন।

বিনিয়োগ এবং সঞ্চয়: পাঠানো অর্থকে সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগানোর উপায়

বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর পর সেই অর্থ যেন প্রাপকের জন্য উপযোগীভাবে ব্যবহৃত হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি। পাঠানো টাকা সঠিকভাবে ব্যয় ও সঞ্চয় করার পরিকল্পনা প্রাপকের জীবনযাত্রাকে উন্নত করতে পারে। এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করা হলো:

  1. সঞ্চয় পরিকল্পনা: পাঠানো টাকা সঠিকভাবে সঞ্চয় করলে তা ভবিষ্যতের জন্য সুরক্ষা প্রদান করতে পারে। প্রাপককে সঞ্চয়ী হিসাব খোলার জন্য উৎসাহিত করুন, যা লম্বা মেয়াদে তাকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করতে পারে।

আরো পড়ুনঃ ই-পাসপোর্ট কীভাবে করবেন? ই-পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম ২০২৫

  1. বিনিয়োগের সুযোগ: টাকা পাঠানোর পাশাপাশি বিনিয়োগের পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে অনেক ধরনের বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে, যেমন সঞ্চয়পত্র, স্থাবর সম্পত্তি কেনা বা ছোটখাটো ব্যবসায় বিনিয়োগ করা। এর মাধ্যমে প্রাপক দীর্ঘ মেয়াদে আর্থিক স্থিতি অর্জন করতে পারেন।

  2. শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য খরচ: প্রাপ্ত অর্থকে সঠিকভাবে শিক্ষার জন্য ব্যবহার করা গেলে তা পরিবারের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে। তাছাড়া, প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্যও প্রাপ্ত অর্থ সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবেলায় সাহায্য করতে পারে।

  3. পরিবারের আর্থিক দায়িত্ব বুঝিয়ে দিন: প্রাপক যেন পাঠানো অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার করেন, সেই বিষয়ে তাকে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করা উচিত। অনেক সময় পরিবারকে অতিরিক্ত দায়িত্ববোধ সৃষ্টি করা যেতে পারে, যা তাদেরকে টাকা সঞ্চয় বা বিনিয়োগের দিকে উৎসাহিত করবে।

সৌদি আরব থেকে টাকা পাঠানোর ভবিষ্যৎ

প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে টাকা পাঠানোর পদ্ধতিতেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে। অনলাইন ট্রান্সফার, ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং মোবাইল পেমেন্টের মাধ্যমে টাকা পাঠানো আগের তুলনায় অনেক সহজ ও দ্রুত হয়েছে। 

ভবিষ্যতে আরো আধুনিক ও নিরাপদ প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রবাসীদের জন্য টাকা পাঠানোর নতুন নতুন পদ্ধতি চালু হতে পারে।

বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যে আর্থিক সংযোগ বাড়াতে বাংলাদেশ সরকারও নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। বিভিন্ন ব্যাংক এবং মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা ও চুক্তি করা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরো সহজ ও সাশ্রয়ী পদ্ধতিতে টাকা পাঠানোর সুযোগ সৃষ্টি করবে।

উপসংহার

সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে টাকা পাঠানোর জন্য বিভিন্ন সহজ ও নিরাপদ পদ্ধতি রয়েছে। প্রতিটি পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা বিচার করে, আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক পদ্ধতি বেছে নিতে হবে। এর মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে, আপনার কষ্টার্জিত অর্থ সঠিকভাবে এবং সময়মতো আপনার প্রিয়জনের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের নিতিমালা মেনে কমেন্ট করুন

comment url